আমি পারসনালি এখনো বিলিভ করি যে, ইনডিয়া এই দেশে ইসলামের যে দুইটা শক্তিকে সবচাইতে বেশী ভয় পায় তা হল, কওমী মাদ্রাসা নেটওয়ার্ক, এবং জামাত-শিবিরের নেটওয়ার্ক। কারণ এই দুইটা শক্তি রাষ্ট্রের বাহিরে নিজেরা নিজেরা অপারেট করে। এবং এরা সেলফ সাফিশিয়েন্ট। রাষ্ট্রকে ছাড়া এরা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পারবে।
ইনডিয়া এবং এর মিত্রদের পক্ষ থেকে কিন্তু এই দুইটা শক্তির লীডারশীপ এবং চেইন ধ্বংস করা, করাপ্ট করার কার্যক্রম তাদের সবসময়ই চলমান থাকবে, তারা এত সহজে থামবে না। এজন্য ইসলামপন্থী হিসবে এ দুইটা গোষ্ঠি নিয়ে আমাদের কনসার্ন থাকবেই। কারণ তাদের সাফল্য এদেশের মুসলিমদেরই সাফল্য। আর তাদের ব্যর্থতা এই দেশের মুসলিমদেরই ব্যর্থতা। এই মুসলিমরা সফল হলে, আরাকান, আসাম, বিহার আর হিন্দুস্তানের মুসলিমরা সফল হবে, ইনশা'ল্লাহ। আর আমরা ব্যর্থ হলে, তাদের ব্যর্থতা, আর জিল্লাতির সময়ও দীর্ঘায়িত হবে।
এখন এই দুইটা শক্তি খুব সেইফ খেলার চেষ্টা করছে, নিজেদের নেটওয়ার্কের বাহিরের কাউকে সহ্যই করতে পারছে না, আদারিং করছে - আমরা এগুলো দেখলে কষ্ট পাই। কারণ আমরা জেনারেল থেকে উঠে আসা পোলাপান। আমরা সবার সাথে মিশার চেষ্টা করি। আমি সালাফীদের সাথেও উঠা বসা করছি। এই দুই দলের সাথেও করছি। এজন্য আমরা চাই তারা যেন মূলে ফিরে যাক, নিজেদের পটেনশিয়ালিটির পুরোটা ইসলাম এবং মুসলিমদের জন্য, নট জাস্ট আমার পক্ষের মুসলিমদের জন্য, বরং আমার বিরোধী যে মুসলিমটা আছে, তার জন্য। এমনকি বেরলভীদের জন্যও।
এখন কেউ যদি মনে করেন যে, আমরা এই মুসলিমদের বড় দুইটা দলের বিভিন্ন ভুল ধরি, এর মানে আমরা তাদের সব অবদানকে অস্বীকার করছি, তাদের কুরবানীকে অস্বীকার করছি, বিষয়টা মোটেও তা না। ইনডিয়া যদি আমাদের জোর করে দখল করতে চায়, তখন আমরা ফ্রন্ট লাইনে এই দুই গোষ্ঠির কর্মীদেরকেই মাঠে পাবো। আমরা একসাথেই তখন রক্ত দিবো। তখন আমরা একসাথেই জনগী হবো, ইনশা'ল্লাহ। তাই আমাদের এত বেশী প্যানিক হবার কারণ নেই। মুসলিমদের মাঝে কিছু ছোট মন-মালিন্য অলটাইমই কম বেশী ছিল। কিন্তু এটা এমন যেন না হয় যে, আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে ইসলাম এবং মুসলিমদের শত্রুদের সাহায্য করি।
আমি এখানে ইমাম ইবনু তাইমিয়ার একটা ঘটনা বলতে চাই, তিনি আসারী-হাম্বলী ধরার মানুষ। তিনি আশা'রী-মাতুরিদি ধারার অনেক ক্লেইমকে রিফিউট করেছেন। অথচ সেই তিনিই তাতারদের বিরুদ্ধে, ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে আশা'রী-মাতুরিদি ধারার সুলতানদের তাইফাতুল মানসুরা তথা মুক্তি প্রাপ্ত দল বলে গেছেন। একাডেমিক রদের যায়গায় রদ ঠিক আছে, আবার পলিটিকালি উম্মাহর স্বার্থ দেখার বেলায়, কিন্তু তিনি পিছিয়ে পড়েন নি। আরো আগে শুরু দিকে যদি যাই, দেখবেন যে, আমাদের মাওলা আলী (রা) এর সাথে আমীরে মুয়াবিয়ার মতবিরোধ এমনকি যুদ্ধের পর যখন রোমানরা আলী (রা) এর বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করার অফার করলো, তখন তিনি কি উত্তর দিয়েছিলেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, হে রোমান কুকুর, এই দিকে এক পা বাড়ালে, আলীর পক্ষে প্রথম যে শহীদ হবে, সে হচ্ছে মুয়াবিয়া!
ইয়েস, আমরা এই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের দাওয়াহই করছি। অন্য কিছু না। আমাদের ভুল হতে পারে, কিন্তু আমরা যেই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের দিকে ফিরে যেতে বলছি, সেটাই হচ্ছে সিরাতুল মুস্তাকিম। সেটাই হচ্ছে দুনিয়া এবং আখিরাতের মুক্তির পথ। আমাদের দিকে আসতে বলছি না। আহলুস সুন্নাহর দিকে আসতে বলছি। আমরা নিজেরাও সেই দিকেই যেতে চাই। শিয়া, এবং সেকুলারদের প্রতিও একই আহবান রইলো।