নারী—ইসলামের শাশ্বত শ্রদ্ধার প্রতীক
ইতিহাস—সে কেবল শুষ্ক তারিখ আর পরিসংখ্যানের খাতা নয়, বরং সে এক সজীব আত্মার দলিল। যদি তুমি তাকে শোনাও সেই অসহায় শিশুটির নীরব কান্না, ইতিহাস বলবে—একদা কন্যা ছিল অপমানিত, পদদলিত, অবমাননার প্রতীক। আর যদি শোনাও ইতিহাসকে সেই অশ্রুসজল আর্তনাদ—"ওয়া মু‘তাসিম!"—তবে ইতিহাস গর্জে উঠবে: “এই আহ্বানে এক সাম্রাজ্য ঘুম ভেঙে জেগেছিল, জ্বলেছিল তলোয়ার, রক্তাক্ত হয়েছিল রোমানদের ভূমি—শুধু একজন নারীর সম্ভ্রম রক্ষায়।”
ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি গহ্বরে ইসলাম তার অনুসারীদের শিখিয়েছে—সম্মান, আত্মমর্যাদা আর ন্যায়বিচার কাকে বলে। আর সেই ন্যায়বিচারের অন্যতম মহিমান্বিত অধ্যায় ছিল—নারীর মর্যাদা রক্ষা।
যখন নারীরা সমাজে ছিল ভোগ্য বস্তু, তাদের কণ্ঠ ছিল নিস্তব্ধ, তাদের জীবন্ত কবর দেওয়া হতো—ঠিক তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে এক মহান দূত এলেন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যিনি নারীদের দিলেন পুনর্জন্ম, দিলেন সম্মানের রাজমুকুট।
ইতিহাসে যুদ্ধ হয়েছে বহু; অধিকাংশই ছিল ধ্বংসের নেশায়, সম্পদের লোভে। কিন্তু ইসলাম রচনা করেছে এক ব্যতিক্রমী অধ্যায়—যেখানে একটি যুদ্ধের কারণ ছিল শুধুই একজন নারীর সম্মান। এই হল সেই জিহাদ—যেখানে তলোয়ার কাঁদে, রক্ত সাক্ষ্য দেয়—ইসলাম নারীর মর্যাদার প্রহরী।
নারীর সম্মান—ইবাদতের মর্যাদায়
আরবের সেই অন্ধকার যুগে, যেখানে পাথরের মতো মনুষ্যত্ব ছিল, কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো, ঠিক তখনই আসমান কেঁপে উঠল আল্লাহর ঘোষণায়—"যখন জীবন্ত কবর দেওয়া কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে—কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে?" (সূরা তাকভীর: ৮-৯) এই আয়াত একটি প্রশ্ন স্রোতের মতো ভেঙে দিল নিষ্ঠুরতার বাঁধ। সে বলল—নারী আর কেবল এক দেহ নয়; সে মা, সে বোন, সে স্ত্রী, সে কন্যা। তার প্রতি অন্যায়ের জবাব দিতে হবে—কিয়ামতের ময়দানে, মহান আরশের নিচে।
আজ থেকে শুরু হচ্ছে এক ঐতিহাসিক ধারাবাহিক, (যা আমি ইতিহাসের পাতা থেকে সংগ্রহ করেছি) যেখানে থাকবে সেইসব গৌরবগাঁথা—যেখানে রক্ত ঝরেছে, কিন্তু সে রক্ত জমি বা সিংহাসনের জন্য নয়, বরং একজন নারীর সম্ভ্রম রক্ষায়।
বিঃদ্রঃ এই ধারাবাহিক কেবল ইতিহাসের পাতা নয়, এটি একটি জাতির আত্মপরিচয়ের আয়না; এটি কেবল যুদ্ধগাথা নয়, বরং ইসলামি সভ্যতার দীপ্ত স্বাক্ষর।
Md Sarwer Hossain